ইতালির নেপলস শহরে করোনাভাইরাস আক্রান্তের লক্ষণ নিয়ে টেরিজা ফ্রান্জেসে নামের এক নারীর মৃত্যুর পর অন্তত ৩৬ ঘণ্টা বাড়িতেই লাশ পড়ে ছিল।
দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য ইতালি কর্তৃপক্ষকে রাজি করাতে ওই নারীর ভাইকে মরিয়া হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আকুল আবেদন জানাতে হয়েছে।
থেরেসা ফ্রান্জাসের ভাই লুসা ফ্রান্জাসে ফেইসবুকে একটি ভিডিও পোস্টে লিখেছেন,“আমার বোন মারা গেছে,বিছানায় আছে।আমি জানি না কি করব। আমি দেহ সৎকার করতে পারিনি। কারণ,তারা আমাদেরকে পরিত্যাক্ত করে রেখেছে।”
৪৭ বছর বয়সী টেরিজা ফ্রান্জেসে তার পরিবার নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় নেপলস শহরে বাস করতেন। গত সপ্তাহে তার করোনাভাইরাস আক্রান্তের লক্ষণ দেখা দেয়। তবে সত্যিই এ ভাইরাস আক্রান্ত কিনা সেটি পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়ার আগেই দ্রুত তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়ে তিনি মারা যান গত শনিবার।
টেরিজা করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন সন্দেহে এমনকি স্থানীয় কোনো হাসপাতালও তার লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানায়।
পরে লুসা ফ্রান্জেসে ভিডিও পোস্টে তার পেছনে শায়িত বোনের মৃতদেহ দেখান।সেখানে তিনি লেখেন,“আমরা ধ্বংস হয়ে গেছি। ইতালি আমাদেরকে পরিত্যাগ করেছে। আসুন একযোগে শক্ত অবস্থানে থাকি।দয়া করে ভিডিওটি শেয়ার করুন।”
শেষ পর্যন্ত ৩৬ ঘণ্টা পর অন্ত্যষ্টিক্রিয়ায় জড়িত একটি সংস্থার কর্মীরা মাস্ক, সুরক্ষিত জুতা, স্যুট, গ্লাভসসহ অন্যান্য জিনিস পরে মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় সমাধিস্থলে নিয়ে গিয়ে সরাসরি কবর দিয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে ফ্রান্জেসের পরিবারটিকে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে পুরো ইতালিই একরকম অবরুদ্ধ হয়ে আছে।
লুসা ফ্রান্জেসে বলেন, “তার বোনের মৃগীরোগ ছিল। তার অবস্থা খারাপ হলে তাকে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছিল।”
শেষ পর্যন্ত পাওয়া পরীক্ষার ফলে দেখা গেছে, টেরিজা ফ্রান্জেসে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে আরো দুটি পরীক্ষায় তার পরিবারের আরো দুইজনের এ ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তবে লুসা আক্রান্ত হননি বলে তার সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে জানানো হয়েছে এক টিভি শো তে।
সূত্র, বিডিনিউজ২৪ ডটকম